Friday, May 24, 2013

Nobo-bodhu -নববধূ

নারি জীবনের প্রত্যাশিত সানাইয়ের সুুর বেজে উঠবে
কোন এক মধুর রজনীতে।
চারিদিকে সাজ সাজ রবে হিড়িক পড়ে যাবে
গ্রামের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্যন্ত
নতুন অতিথি বরণের অপেক্ষায় রইবে
প্রতিবেশী কুলবধূগণ।
সদর দরজার সম্মুখ আঙিনাটি
ফুলে ফুলে ভরে যাবে রং বেরঙের গোলাপের পাপড়িতে।
কাঁচা হলুদ মেখে গোলাপের পাপড়ি ডোবানো জলে
øান করিয়ে লাল বেনারসীতে মুড়ে রাখা হবে
ফুলের বিছানায়, যেখানে জ্বলে উঠবে
লাল, নীল, সবুজ রঙের রঙিন ঝাড় বাতি।

সখিরা কোমল হাতের স্পর্শ দিয়ে পরিয়ে দেবে
জড়োয়া গহনা, হাতে আঁকবে রক্ত রাঙা মেহেদীর নকশা।
গোলাপ রাঙা ঠোঁট দুটি মৃদু মৃদু কেঁপে উঠবে
কিছু বলার ভঙ্গিমায় আর
কাঁজল কালো আঁখি দুটি নিরব তাকিয়ে রবে
কোন ভাষা থাকবে না মুখে।

জবা ফুলের শীষের মত দুই তনুতে এঁকে দেবে
চন্দনের ফোঁটা, নাকের নথটি টেনে বাঁধা হবে
গহনার সূতা দিয়ে।
ধনুক বাঁকা দুই ভ্রƒর মাঝখানে সোনার টিকলী
দুলতে থাকবে পেন্ডুলামের মত,
বনের ফোটা জবা ফুলের মত কর্ণ লতিকায়
শোভা পাবে ঝুমকো দুল।
আলতো করে যখন পা দুখানি বাড়িয়ে দেবে
তাতে পরিয়ে দেয়া হবে রুনু-ঝুনু নূপুরের হার।

বধূ সাজে তোমাকে দারুণ মানাবে,
শুভ তিথীতে নববধূর সাজে সজ্জিত
তোমার জোছ্না øাত মুখটি লজ্জায় রাঙা হয়ে উঠবে,
সকল মায়ার বাঁধন ছিন্ন করে দূরের ঐ
শ্যামল তরুর গ্রামে আশ্রয় নিবে
নতুন অতিথির আসন গ্রহন করে।
পিতা মাতাকে কাঁদিয়ে অন্যের ঘর সাজাতে
ছেড়ে চলে যাবে তুমি সকল আত্মীয় স্বজনকে।

Nupur -নুপুর

সুন্দর ধরণীর বুকে দাঁড়িয়ে থাকা বৃক্ষের মত
উদার তুমি নুপুর। প্রকৃতির রং রূপ মাধুর্য্য
নিয়ে তুমি দাঁড়িয়ে ছিলে ওই বৃক্ষের তলে
এক মুঠো কাঁশ ফুল হাতে।
তুমি ভাবছ আমি তোমায় দেখেছি, না দেখিনি।

সবুজ পাতার নিচে প্রাসাদ সম বাড়িতে
তুমি খোলা চুলে বসেছ বসন্তের দুপুরে। মনে পড়ে,
ছাদে দাঁড়িয়ে চুল শুকিয়ে চিরুনিকে আদেশ করেছিলে
তোমার বেণী সাজাতে।
তুমি ভাবছ আমি তোমায় দেখেছি, না দেখিনি।

তোমার দৃষ্টি সীমার সম্মুখে রয়েছে নীল সমুদ্রের মত
বি¯তৃত আকাশ, যার তলে তুমি একা দাঁড়িয়ে
ভেবেছিলে কতই না সুন্দর-মনোরম এই
পৃথিবিটা
তুমি ভাবছ আমি তোমায় বুঝেছি, না বুঝিনি।

চঞ্চলা চপলা কোমল তনয়া তুমি নুপুর।
তোমার কোমল হৃদয়ে লুকিয়ে থাকা
অস্পষ্ট ভাষা গুলো বলছে একাকি পথ চলার
কথাটা।
তুমি ভাবছ আমি তোমায় বুঝেছি, না বুঝিনি।

সদ্য প্রস্ফুটিত গোলাপের পাপড়ির মত শুভ্র হাসিটা
ত্রিভুবনকে আন্দোলিত করে নেশা ধরিয়ে দেয়।
সেই হাসিটার মর্মার্থ ছড়িয়ে দিল সবুজ
প্রান্তর।
তুমি ভাবছ আমি তোমায় দেখেছি, না দেখিনি।

শিশুর কোমল পায়ে আলতো ভাবে হেটে চলেছিলে
বাঁকা পথটি ধরে সুন্দর কাননে। চলার ছন্দে কাননের ফুল
নৃত্য করে প্রকৃতিকে জানিয়ে দেয় নুপুরের আসার
খবর।
তুমি ভাবছ আমি তোমায় দেখেছি, না দেখিনি।


মিষ্টি ভাষী অপরূপা তুমি বলেছিলে মধুর স্বরে
কথা তোমার বন্ধুর সাথে, যে কথা আমি দূর থেকে
শুনেছিলাম। তোমার মুখের ভাষা এনে দিয়েছে আমার চলার
গতি।
তুমি ভাবছ আমি তোমায় দেখেছি, না দেখিনি।

আকাশে উড়া পাখির মত ডানা মেলে উড়ে চলে তোমার মন
সাদা মেঘের ভেলার উপর আর রাতের øিগ্ধতা,
চন্দ্রের আলো, তারকাদের বন্ধুত্ব তোমাকে দিয়েছে অকৃত্রিম
প্রীতি।
তুমি ভাবছ আমি তোমায় দেখেছি, না দেখিনি।

তুমি অনেক দূরে গৃহ কোণে নিরবে বসে ভাবছ,
তার দেখা পেলাম না এই দু’নয়ন সম্মুখে।
সে নিশ্চয় আমাকে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখেছে।

তুমি এখনও ভাবছ আমি তোমায় দেখেছি,
সত্যিই আমি তোমায় দেখিনি নুপুর।

Thursday, May 23, 2013

Josna Senan -জোছ্না স্নান


 শ্রাবণের ভরা পুকুরে
রাতের জোছ্না খেলা করে বেড়ায়ভরা পুকুরের
মুগ্ধকর জল চাঁদের মিতালির এমন রাতে
সখি পাশে থাকতে মন চায়- নিবিড় আলিঙ্গনে

তোমার চিকন সুরের মহিমা
মোহনিদ্রায় শায়িত করবে আমাকে
আর মাধবী ফুলের সুবাস কেড়ে নেবে
সকল দূষিত বাতাস
জোছ্না রাতের অতল সাগরে
স্নান করতে কোন বাঁধা নেই,
দিক ভোলা বিবাগীর মত হারিয়ে যেতে ইচ্ছা করে
ভরা পুকুরের জলে দেহ ভাসিয়ে
সাঁতরে তুলে এনেছো যে পদ্ম,
তার মূল্য অতি তুচ্ছ তোমার হাসির নিকট-
তোমার মায়বী নেত্রদ্বয়ের চাহনি
ব্যাকুল করে রাত জাগা ঐ পাখিকে

অদূরে দাঁড়িয়ে দেখেছি কি তোমার হৃদয়
কাঁপান ঠোঁটের ফাঁকে লুকিয়ে থাকা যত কথা
তবুও যাইনি তোমার সম্মুখে কইতে কথা, শুধু
তোমার মুখ ফুটে বলার অপেক্ষায়


Wednesday, May 22, 2013

Birohini -বিরহিনী


বসন্তের স্তব্ধ মধ্যরাতে তারা খচিত আকাশে
দেখি তোমার ছায়াপাহাড়ি ঝর্ণা ধারা
বয়ে চলে নদীর টানে আর নদী যায় মোহনায়
রূপসি তরুণী হেলে দুলে চলে
পাহাড়ি আঁকাবাঁকা পথে-
ভরা যৌবন তার উপছে পড়েছে দুচোখে
বসন্তের কোকিল মৃদু স্বরে ডাক দিয়ে যায়
তার হৃদয়ের আঙিনায়

দোলের পূর্ণ চাঁদে তার রূপের জৌলুস
স্নিগ্ধ করে ঝড় তোলে মন সমুদ্রে,
অধীর আগ্রহে বসে থাকা মধ্যরাতের চন্দ্র
তাকে হাত বাড়িয়ে ডাকে, তবুও সে ফিরে ফিরে যায়
তার সর্পিল চলনে সমুদ্রের জলরাশি উবছে উঠে
তাকে পেতে চায় কিন্তু গভীর রাতের নববধূর মত
আড়ামোড়া দিয়ে ওঠে তার হৃদয়ে

প্রতিনিয়ত একা সে ফিরে যায়Ñ
আশা তার পূর্ণ হয় না কলংকের  ভয়েবিবাহ বন্ধন,
তাকে আবদ্ধ করেনি তাই সে ফিরে যায় বারে বারে
একাকি নিঝুম রাতে ফুপিয়ে ফুপিয়ে অশ্রবির্সজনে
হৃদয়কে হাল্কা করে

Sudhu Tomar Jonno -শুধু তোমার জন্য


এই অবারিত পুষ্প সজ্জিত বসুন্ধরায় তোমার
স্নিগ্ধ হাসি যেন ফোটা কমল আর শরতে ফোটা
শিউলী ফুলের মত
বিভাবরী নয়ন যুগল উন্নত ভ্রƒতে চন্দ্রের ছোঁয়া
এঁকে দিয়েছে ধনুক আর পলাশ ফুল
রঙে রাঙিয়ে দিয়েছে তোমার ওষ্ঠদ্বয়

তোমার রূপ সৌন্দর্য্য গহ্বরে হারিয়ে যেতে ইচ্ছা করে
সূর্য তাপে যেমন বৃক্ষরাজি তরতাজা হয়ে ওঠে
তেমনি তোমার পানে চেয়ে
আমার অসাড় দেহ খানি সজিবতা ফিরে পায়
আর নয়ন সম্মুখে দেখতে পাই
অজস্র সুখে দোলান শতদল
তোমার প্রকৃত শ্বাসত রূপ ধাঁধিয়ে দিয়েছে
আর কেড়ে নিয়েছে সকল নিদ্রা-পানাহার

তোমায় এক পলক দেখার জন্য
সূর্য অধীর আগ্রহে বসে থাকে সারা রাত্রি
প্রভাত কালে যখন তুমি তাকে দেখবে,
মনে হবে কত যুগ না দেখে তোমায়
মুখটা কেমন কমলা বর্ণ ধারণ করেছে

শারদ স্নিগ্ধ রাতে,
চন্দ্র তোমায় দেখে আনন্দে পুলকিত হয়ে
তোমার সুন্দর বদনে ছড়িয়ে দেয় জোছ্নার আলো
তখন চারিদিকে ছিন্ন হয় সকল পার্থক্যের বেড়া জাল
অনেক দুষ্ট ছেলে তোমার রূপ মাধুর্য্য দর্শনে
উন্মাদ হয়ে কবিতা লিখতে বসে,
তুমি আমার ভালবাসা

কিন্তু সহস্র নয়নে যখন ওই তারকা পুঞ্জ
তোমার পানে চেয়ে হাত বাড়ায় বাহু ডোরে বাঁধতে
তখন আমার হিংসা হয়, কেন জান?
যদি তোমাকে গভীর রজনীতে চুরি করে নিয়ে যায়,
তুমি যদি আমার কথা ভুলে যাও তাদের পানে চেয়ে,
আমাকে যদি চিনতে না পার
অসংখ্য জ্বল জ্বল করা নক্ষত্রের মাঝে-
এই ভয়ে শিহ্রে উঠি

Monday, May 20, 2013

Kew Bujhini -কেউ বুঝিনি

কেউ বুঝিনি মধ্যরাতের নিরব সাগরের কান্না
আলোক হীন একাকি নক্ষত্র পানে চেয়ে থাকা
নিস্পলক দুটি আঁখি খুঁজে ফেরে তোমাকে।

কতদিন দেখিনি সেই বকুল ফুলের মালা তোমার হাতে
যা তুমি পরিয়ে দিয়েছ কোমল পরশে।
ভাবনা গুলো সাথীহীন হৃদয় কূলে আছড়ে পড়ে জানিয়ে দেয়
হৃদয়ের রক্তক্ষরণ।
সকল বনানী মাঝে ধূসর ধোঁয়া কুন্ডলী পাকিয়ে
দৃষ্টিকে আচ্ছন্ন করে ফেলেছে।
সবুজ পাতারা শুকিয়ে মচ্মচে হয়ে পদ চাপে চূর্ণ হয়েছে,
শুষ্কতা তাদের করেছে গ্রাস।

হৃদয় রাজ্যের গহিনে তাজা রক্তের প্রবাহ
বারে বারে উচ্ছলায় ওঠে বুকের পাঁজরে
আর নির্মম বাস্তবতা উসকে দিয়েছে যাতনা।
এই হৃদয়ের সকল অভিমান, কষ্ট
সুখের আশায় হয়েছে দিক ভ্রান্ত পথিকের ন্যায়।
কেউ বুঝিনি প্রেমহীন বেদনা সংকুল হিয়ার আর্তনাদ।
শ্রাবণ ধারার জলরাশিতে মিশে
শীতল বুকে জ্বেলে দেয়নি উষ্ণতা।

নিদ্রাহীন নিশি স্মৃতিকে স্মরনে বিধে ক্ষত বিক্ষত করে স্বপ্ন।
আস্তাকুড়ে ফেলে দেয়া মানুষ সুখহীন রজনী কোলে
হেলে পড়ে বেদনায় বালিশহীন শক্ত বিছানায়।

একাকি রাত্রি যাপনে হৃদয় মাঝের গোপন বার্তা শুনে
চমকে উঠি অন্ধকারে দিশাহীন নাবিকের জাহাজের এক প্রান্তে।
হাস্য উজ্জ্বল মুখ গহ্বরে লুকিয়ে থাকা কথা গুলো
বেরিয়ে আসতে পারিনি দুই ওষ্টকে ভেদ করে।
শক্ত প্রাচীর ভেদ করে আসেনি গুমরে মরা কান্নার আওয়াজ।

কষ্টের দিন হামাগুড়ি দিয়ে চলে সম্মুখ আলেয়ার পানে।
ধনুকের তীর বিধতে অক্ষম হয়ে
যেন ফিরে এসে ছিড়ে দিয়েছে আপন অঙ্গকে।
তবুও কেউ বুঝিনি
হিম শীতল হৃদয়ের অস্তিত্বকে।

Saturday, May 18, 2013

Gopon Kotha -গোপন কথা


বৃক্ষরাজি কোন কথা বলেনি
শুধু নিরব নয়নে তাকিয়ে রইলাম তোমার পানে
দুই একটা শালিক পাখি জোড় বেঁধেছে
কইছে মধুর সুরে কথা-
পুকুর পাড়ে ঢেউ লেগেছে
যুবদের সাঁতারের

এলো চুলের উর্বশী- তুমি অনন্যা,
হাসিতে যেন মুক্ত ঝরানো তরঙ্গ
গাছ পাতারা দোলা দিয়ে
জানিয়েছে তার অনুভূতি

কারুকার্য মন্ডিত তব আবরণটি
করে মুগ্ধ-
ধীর লয়ে যে পথে হেঁটে এসেছো
সে জানিয়েছে তোমার কোমল পায়ের
পরশের কথা
সবুজ বলেছে দেখ শ্যামলীমা নাচে

তোমার হাতের শিরায় রয়েছে,
নীল রঙের ছটা আর পায়ের পাতায়
রক্তিম মেহেদী
ভবিষ্যত ফুটে উঠেছে নয়ন সম্মুখে,
চোখ দুটি ঠোঁটকে জানিয়েছে
না বলা কথা
অনেক কষ্টে আকাশকে একটু দেখেছিলাম
সেখানে কোন সৌন্দর্য্য খুঁজে পেলাম না

তোমার দ্রুত ফেরায় চারিদিকে দেখিনি কিছু
বন্দি করেছিল ভাবনা
তাই মনের মাঝে গোপন কথা
উঁকি দিয়ে বলে-
আর একটু না হয় রইতে মোর পাশে

Asar Dhoni -আশার ধ্বনি


তুমি ভাবছো কেন! দেখো আকাশটা নীল হয়েছে,
সবুজ হয়েছে প্রকৃতি আর সমুদ্র হয়েছে শান্ত
যে জলরাশিতে মৎস করে অবাধ বিচরণ, দেখো
মুক্ত বিহঙ্গ কেমন উড়ে বেড়ায় ডানা মেলে নীল আকাশে

তুমি কাঁদছো কেন! দেখো পাখিরা গান গাইছে,
ধানের শীষে লেগেছে দোলা, কৃষাণীরা কোমল পরশ
বুলিয়েছে তাদের অঙ্গে, সোনলী রঙ চিক চিক করছে,
তুমি দেখলে সকল অতীত ভুলে যাবে

তুমি বেদনাতুর কেন! দেখছো না নদী তীরে
সাদা বক কেমন খেলা করে, তাদের মাঝে কি হৃদ্যতা,
সাদা ডানার বাতাসে তৃণ যেন নুয়ে যায়, দেখো দেখো
সরু পায়ে কেমন হেলে দুলে চলে

তুমি হতাশাগ্রহস্ত কেন! দেখো মাছরাঙা কেমন
ধ্যানে বসেছে, কোকিল মিষ্টি সুরে গান গাইছে ওই কাননে,
তুমি তাকিয়ে দেখো রংধনু কেমন সেজেছে সাত রঙে
আর পৃথিবীকে রাঙিয়েছে রেখা টেনে

তুমি তৃষ্ণার্ত কেন! ঐ দেখো দোয়েল পাখি শীষ দিচ্ছে,
পলাশ ফুটেছে গাছের শাখায়, তরুণ অরুণ উঠেছে পূর্ব দিগন্তে,
পাখিরা কেমন চঞ্চল হয়ে উঠেছে মধুর স্বরে
আর সকল জড়তাকে ভেঙে দিয়েছে

তুমি বিরহিনী কেন! দেখছো না রাতের তারা
কেমন ঝলমল করছে, বাদুড়েরা ছুটে চলেছে দল বেধে,
ঘরে ঘরে জ্বলছে লাল-নীল প্রদীপ শিখা
আর ঝিঁঝি পোকার গান

যাওÑকষ্ট ভুলে, তাকাও ধরণীর পানে,
সকল কিছুতেই রয়েছে প্রাণের উচ্ছ্বাস-উদ্যম,
তোমার স্মৃতির কোঠরের সকল বেদনাকে
আছড়ে ফেলে দাও অতীত গর্ভে
আর কখনো হাতড়ে দেখনা-
সবুজ তো রয়েছে তোমার পাশে

Thursday, May 16, 2013

Bondhu -বন্ধু


বন্ধু

বড় মুখ করে তোমায় আমি বলেছিলাম,
ভালবাসি
কিন্তু তুমি ফিরিয়ে দিলে আমার দুটি হাত
দিগন্ত জোড়া যত মাঠ ফসলকে আমি সাক্ষী রেখেছি,
বলেছি তাদেরকে আমার প্রিয়ার কথা

মাঠের সবুজ ঘাস আর গাছের পাতারা
আমাকে বলেছে,
তুমি কাঁদছ কেন? তোমার সবুজ মন
এখনো হারিয়ে যায়নি,
তোমার ভালবাসা বয়ে চলেছে প্রবাহমান
নদীর মত, সমুদ্র মোহনায় মিলিত হওয়ার প্রার্থনায়
তোমাকে ফিরিয়ে দেবে কোন্ সে ললনা?
তার দুনয়নে কি অশ্রজল নেই,
হৃদয় রাজ্য কি তার শুষ্ক মরুভূমি,
মনে হয় সেখানে ধূধূ করে বালু কণা

উঠে দেখ, চারিদিকে কত সহস্র রমণী
কলসী কাঁখে জল ভরিতে যায় নদীর ঘাটে;
তাদের ভ্রƒ তলে কালো নয়ন যুগল, কেমন ফিরে ফিরে চায়
আর কোমরের বিছা দুলিয়ে চলে
তোমার ভালবাসা চির অ¤¬ান, কষ্ট ভুলে তুলে নাও,
তুলে নাও শ্যামের বাঁশি
আর বাজাও মন আনন্দে ভালবাসার গান
দেখবে, কত রমণী ছুটে এসেছে
তোমার পানে দুদন্ড দেখার আশায়

ভুলব না তরুলতা তোমার কথা,
তুমি বন্ধু, তুমি সাথী আমারএকমাত্র তুমিই
বুঝলে আমার এই মনের কথা
আমি বাজাব সেই বাঁশি,
তোমার ছায়া তলে বসে





Jolsobi



Chatok-চাতক


চাতক

বসন্তের নির্জন রাতে এক চাতক পাখি ডাকে উর্ধ্বমুখি
এক ফোঁটা জলের অপেক্ষায়
ভেবে ভেবে আকুল প্রাণ কেঁদে ফেরে আঙিনায়-
সেথায় দাঁড়িয়ে থাকা হুতুম পেঁচারা বলে
বেশ হয়েছে বেশ হয়েছে, কে যেতে বলেছে তোকে খেঁয়ায়

আহত হৃদয়ে চাতক ডাকে পুনরায়-
বলে,
আজিকের এদিনে কাকে বোঝাই মোর হৃদয়ের বেদনা
আঁখি যুগল সিক্ত অশ্রজলে

উদাস নয়নে মেঘমালা জানিয়েছে সমবেদনা
তাইতো আজ তারা কাঁদছে আর বলছে,
হে চাতক নওজোয়ান পিছে নয় অগ্রসর হও,
হুতুম পেঁচার ভয়ে মুখ থুবড়ে পড়োনা
আজ না মানলেও
রাতের আঁধারে মানুষ তোমাকে নিয়ে ভাববে,
বলবে ওই দেখ চাতক পাখি ডাকছে প্রিয়ার জন্য
গভীর রাতে যখন বাঁশ বাগানের ফাঁকে চন্দ্র উঁকি দেবে
তখনও তোমাকে নিয়ে মানুষ ভাববে,
বলবে ওই দেখ চন্দ্রিমা একা একা দেখছে তোমাকে

তোমার ব্যথিত হওয়ার তো কোন কারণ নেই,
তুমি নির্মল প্রকৃতির মাঝে বিচরণ কর
আর দেখিয়ে দাও চাতক
তোমার ডাকে প্রকৃতিতে বৃষ্টি নামে







Wednesday, May 15, 2013

Boishak - বৈশাখ

বৈশাখ

এলো বৈশাখ, মুঠো ভর্তি আশা নিয়ে।
ছোট্ট আম্রের কাঁচা ঘ্রাণ,
মিষ্টি রৌদ্রের ত্বক-বৈভব, তড়িঘড়ি পবনের
উন্মত্ত দোলা,
বৃক্ষের ছায়-শীতল অনুভূতি,
সবি দিয়েছে উপহার।

ইলিশ-পান্তার হৈ-হুলে¬াড় প্রভাত,
কাঁচ হলুদ মাখা শাড়ির ঘোমটা ছাড়া
দুপুর,
মুখনিঃসৃত পালা গানের ভরপুর সন্ধ্যা,
পুরাতন কেচ্চার রস-মাখানো রাত্রি,
এই তো সবুজ-ঘেরা বাংলার বাহার।

অবুঝ মেঘেদের আনাগোনা-নীলিমা,
বরুনের আনন্দ-অশ্র“ লুটানো ভূমি,
উড়ন-চন্ডী বৈশাখীর তান্ডব-প্রকৃতি,
সৈকতের বালুকায় লুকানো পুঁতি-মালা,
রয়েছে সবার সাথে গভীর মিতালি-ঝর্ণার।

নানা আয়োজনের মধু-সময়,
কোকিলের রক্ত-অক্ষির প্রেমের আকুলতা,
দোয়েলের আড়বাঁশির সুর-মূর্চ্ছনা,
বিমোহিত বৈশাখীর রূপ-সৌন্দর্য্য,
এরকম ঘটেছে আজ সমাহার।

ঘরে ঘরে অতিথীর আগমনে পূর্ণতা,
বৃক্ষতলে তরুণ-তরুনীর হাস্য-উচ্ছ্বাস বন্যা,
আঁড়ালে শালিকের প্রেমালাপ,
দুয়ারে জৈষ্ঠ্যের হবু-বার্তা,
সকলি অমৃত ফসল স্রষ্টা-করুণার।

Last 7 Days!